সম্প্রতি

ZERO PROJECT এর পক্ষ হতে আইটি স্কুল নিয়ে আসছে ICC World cup Match কুইজ কন্টেস্ট। তৈরি থাকুন সবাই আর জিতে নিন মোবাইল রিচার্জ..........

মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৩

৫ম শ্রেনি, বাংলা, আমাদের লোকশিল্প (লেকচার-২)

আস্‌সালামুআলাইকুম............. আজ তোমাদের সামনে  আমাদের লোকশিল্প অধ্যায়ের ২য় লেকচার টি তুলে ধরবো। যা তোমাদের পরিক্ষা সহযোগিতা করবে ইন্‌সাল্লাহ........................
পুর্বের পোষ্ট গুলো এখানে

আমাদের লোকশিল্প 
লেকচার – ২ 

প্রশ্ন ও উত্তর :

১. প্রশ্ন : আরিফ তার এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান উপহার হিসেবে নিয়ে যায় একটি পিতলের কলস। কিন্তু অধিকাংশ অতিথি নিয়ে এসেছেন নানা ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী। আরিফের উপহারটি দেখে অনেকেই মুখ টিপে হাসে। কিন্তু আরিফ পাত্তা দেয় নি। বরং দুর্লভ-প্রায় এই লোকশিল্পটি উপহার দিতে পেরে সে গর্বিত। কেননা সে জানে এর মধ্যেই রয়েছে আমাদের লোক-ঐতিহ্যের যথার্থ পরিচয়। 

ক) ঢাকার কোন জিনিসটি মোঘল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল ? 
খ) বর্তমানে বড় বড় কাপড়ের কারখানাগুলো শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে উঠছে কেন ? 
গ) উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কোন দিকটির পরিচয় বহন করে ? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ) আরিফের এ মানসিকতা আমাদের লোক ঐতিহ্য সংরক্ষণে কতটুকু ভূমিকা পালন করে ? ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো। 

১ নং প্রশ্নের উত্তর :

ক) উত্তর : মসলিন কাপড়। 

খ) উত্তর : শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী আবহাওয়া কাপড় তৈরির জন্য বিশেষ উপযোগী বলেই বর্তমানে বড় বড় আপড়ের কারখানাগুলো এ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। 

প্রাচীনকাল থেকেই এদেশের কাপড়শিল্পের একটা বড় অংশ শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছে। কারণ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা গেছে যে, শীতলক্ষ্যা নদীর পানির বাষ্প থেকে যে আর্দ্রতার সৃষ্টি হয় তা কাপড় তৈরির জন্য বিশেষ উপযোগী। আর এজন্যই বর্তমানে বড় বড় অনেক কাপড়ের কল এ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। 

গ) উত্তর : উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের দুর্লভ লোকশিল্পের ঐতিহ্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। 

বাংলাদেশের লোকশিল্প সমৃদ্ধ সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে। এদেশের মানুষ প্রয়োজন ও শখের বশে নানা হস্তজাত পণ্য তৈরি করে আসছে, যার অন্যতম হচ্ছে কাঁসা ও পিতলের তৈরি তৈজসপত্রসমূহ। বর্তমানে এসব জিনিসের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসছে। উদ্দীপকটি এ বিষয়টিই তুলে ধরেছে। 

কাঁসা ও পিতলের জিনিসের মূল্যায়ন ও জনপ্রিয়তা দিন দিন কমে আসছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষ এখন মেলামাইন বা প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করছে। কিন্তু উদ্দীপকে আরিফ বিয়ের উপহার হিসেবে পিতলের কলস এনে আমাদের লোকশিল্পের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তার এ উদ্যোগ আমাদের বিলুপ্ত-প্রায় লোকশিল্পকে আমাদের সামনে তাত্পর্যপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেছে। 

ঘ) উত্তর : উদ্দীপকের আরিফের মানসিকতা আমাদের লোক-ঐতিহ্য সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক লোকশিল্পের নানা দিকের পরিচয় তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি এই লোকশিল্পের সংরক্ষণ এ প্রসারের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, যা উদ্দীপকের আরিফের মানসিকতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। 

লোকশিল্প আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য এ প্রাণের সম্পদ। লোকশিল্পের বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক ও সময়ের পরিবর্তনে এটি লুপ্তপ্রায়। যেমন পিতলের তৈজসপত্র এখন গৃহস্থালি কাজে তেমন একটা ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু বিশ্বের দরবারে আমাদের ঐতিহ্যের পরিচিতি হতে পারে এসব লোকশিল্প। 

লোক ঐতিহ্যকে রক্ষা এবং প্রসারে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করা প্রয়োজন। উদ্দীপকের আরিফ সকলের উপহাসকে উপেক্ষা করেও পিতলের কলস উপহার দিয়ে লোকশিল্পের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। লোক ঐতিহ্য সংরক্ষণে এমন উদ্যোগের কথাই বলা হয়েছে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে। তার এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আমাদের লোকশিল্প সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। 

২. প্রশ্ন : সোহানের দাদু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কর্মী ছিলেন। এ আন্দোলনের বড় একটি দিক ছিল বিদেশি পণ্য বর্জন, দেশি পণ্য গ্রহণ। সোহানের দাদা ও তার সহযোদ্ধারা নিজেদের কাপড় নিজেরাই বুনতেন। 

ক) ঢাকা মসলিন কাদের বিলাসের বস্তু ছিল ? 
খ) জামদানী শাড়ির বৈশিষ্ট্য কি ? 
গ) তানিমের দাদার বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনকে কি নামে অভিহিত করা হতো ? ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধ অবলম্বনে তা ব্যাখ্যা করো। 
ঘ) ‘নিজেদের কাপড় নিজেরাই বুনত’ – উক্তিটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কোন দিকটিকে ইঙ্গিত করে তা বিশ্লেষণ করো। 

২ নং প্রশ্নের উত্তর :

ক) উত্তর : মোঘল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল। 

খ) উত্তর : জামদানি শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, নদীর তীরবর্তী এলাকায় এ শাড়ি তৈরি করা হয়। 

বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের বিস্তারে শীতলক্ষ্যা নদীর ভূমিকা অনন্য। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, শীতলক্ষ্যার পানি বাষ্প হয়ে যে আর্দ্রতার সৃষ্টি করে, তা জামদানি বোনার জন্য খুবই উপযোগী। এ কারণে শুধু জামদানি নয়, রবং বড় বড় কাপড়ের কারখানাও শীতলক্ষ্যার তীরে গড়ে উঠেছে। জামদানি শাড়ি তৈরিতে সবচেয়ে জরুরি উপযুক্ত আবহাওয়া। 


গ) উত্তর : উদ্দীপকে সোহানের দাদুর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে কামরুল হাসান স্বদেশি আন্দোলন বলে উল্লেখ করেছেন। 

উদ্দীপকের সোহানের দাদু ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন কর্মী ছিলেন। এ উল্লেখযোগ্য আন্দোলনের দিকটি ছিল বিদশি পণ্য বর্জন, দেশি পণ্য গ্রহন। ফলে আন্দোলনকারীরা নিজেরাই নিজেদের কাপড় বুনতেন। 

ব্রিটিশ সরকারের নিকট ভারতবাসীদের মৌলিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯১৭ সালে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে স্বদেশী আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। এ সময় বিলেতি পণ্য ব্যবহার পরিত্যাগ করে দেশি পণ্য ব্যবহার করার কথা বলা হয়। ফলে তুলা থেকে হাতে সুতা কেটে হস্তচালিত তাঁতে এসব সুতায় কাপড় তৈরি করা হত। সে সময় বিলেতি কাপড়ের পরিবর্তে এসব দেশি কাপড় পরিধাণ করা হতো। প্রবন্ধ ও উদ্দীপকে বর্ণিত এ কাপড় খাদি বা খদ্দর নামে পরিচিত। স্বদেশের কাপড় পরিধান করে আন্দোলন করায় একে স্বদেশী আন্দোলন বলা হয়েছে। 

ঘ) উত্তর : ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে ও উদ্দীপকে খাদি কাপড় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীরা নিজেদের কাপড় নিজেরাই তৈরি করত। 

উদ্দীপকের সোহানের দাদু ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী ছিলেন। এ আন্দোলনের মূখ্য বিষয় ছিল ইংরেজদের উত্পাদিত পণ্য বর্জন করা। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক এ আন্দোলনকে স্বদেশি আন্দোলন বলে উল্লেখ করেছেন। 

উদ্দীপকের দাদুর কথিত খাদি কাপড়ের প্রসঙ্গ ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধেও উল্লেখ করা হয়েছে। অনিকের দাদুর বক্তব্য অনুযায়ী স্বদেশি আন্দোলনের সময়ে বিদেশি কাপড় বর্জন করে দেশি কাপড় গ্রহন করা হয়। 

ইংরেজদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯১৭ সালে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে স্বদেশি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। এ আন্দোলনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- স্বদেশের উত্পাদিত পণ্য ব্যবহার এবং বিদেশি বিশেষ করে ইংরেজদের উত্পাদিত পণ্য বর্জন। এসময় তুলা থেকে সুতা তৈরি করে হস্তচালিত তাঁতে এসব সুতায় কাপড় প্রস্তুত করা হতো, যা খাদি বা খদ্দর নামে পরিচিত। যেহেতু তারা বিদেশি পণ্য বর্জন করেছিলেন, সেহেতু তাদের নিজেদের কাপড় নিজকেই বুনতে হতো। 

৩. প্রশ্ন : বাংলাদেশের একটি প্রাচীনতম লোকশিল্প মৃৎশিল্প। গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী মৃ‍ৎশিল্পের নিদর্শন। তা ছাড়া রয়েছে কাঠের বিভিন্ন রকমের অলংকার যেমন- চুড়ি, মালা, দুল ইত্যাদি। এগুলো সবই লোকশিল্পের অতুলনীয় নিদর্শন। 

ক) খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব কী ? 
খ) গ্রামীণ লোকশিল্পের বিলুপ্তির কারণ ব্যাখ্যা করো। 
গ) উদ্দীপকে গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের দিকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো। 
ঘ) উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধেরই মূলভাব উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো। 

৩ নং প্রশ্নের উত্তর :

ক) উত্তর : এর সবটাই হাতে প্রস্তুত। 

খ) উত্তর : গ্রামীণ লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের অভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশের লোকশিল্প দীর্ঘদিন ধরে এদেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারিগরি দক্ষতা ও শিল্পীমন এ শিল্পকে দীর্ঘদিন প্রাণবন্ত করে রেখেছিল। অথচ আজ এ শিল্প সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণের অভাবে বিলুপ্তপ্রায়। 

গ) উত্তর : কামরুল হাসান রচিত ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধ ও উদ্দীপক থেকে আমরা জানতে পারি, মৃত্‌শিল্প বাংলাদেশের লোকশিল্পের অন্যতম নির্দশন। 

লোকশিল্পের বিকাশে মৃত্‌শিল্প ভূমিকা অনন্য। মাটির তৈরি জিনিসপত্রকে মৃত্‌শিল্প বলে। মৃত্‌শিল্পের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় গৃহস্থালির কাজে, যেমন- তৈজসপত্র, হাঁড়ি, পাতিল, সানকি, পিঠা তৈরির ছাঁচ ইত্যাদি। 

মৃত্‌শিল্প ছাড়াও কাঁসা ও পিতলের বাসনপত্র এককালে প্রচলিত ছিল। আজও বাংলাদেশেরগ্রামাঞ্চলে কাঁসা বা পিতলের গৃহস্থালিতে ব্যবহার লক্ষণীয়। বর্তমানসময়ে আধুনিক গৃহসজ্জার সামগ্রী হিসেবে তামা-পিতলের ঘড়ি, থালা-বাটি, ফুলদানি প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া পোড়ামাটির তৈরি জিনিসপত্র বর্তমান আধুনিক ও রুচিশীল সমাজে ব্যবহৃত হয়। গ্রামের মানুষদের তৈরি এসব জিনিসপত্র যেমন আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটায়, এগুলো তেমনই লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারকও বটে। 

ঘ) উত্তর : উদ্দীপকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। যা উদ্দীপক ও ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধেরই মূলভাবের প্রতিনিধিত্ব করে। 

‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বাংলাদেশের লোকশিল্পের ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। উদ্দীপকে বিভিন্ন লোকশিল্পের কথা বলা হয়েছে। এগুলো যেমন আমাদের প্রয়োজন মেটায়, তেমনি এগুলোর ব্যবহার আধুনিক রুচিরও বহিঃপ্রকাশ ঘটে। 

উদ্দীপকে মৃত্‌শিল্প ও কাঁসা পিতলের তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যেমন- রান্নার হাঁড়ি-পাতিল, সানকি, ফুলের টব, বাক্স ইত্যাদির ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।‘ আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লোকশিল্পের নানামুখী ব্যবহার, যেমন- মৃত্‌শিল্প, নকশিকাঁথা, শীতলপাটি, বাঁশ ও কাঠের কারুকার্য, মসলিন ও খদ্দরের নানামুখী ব্যবহারের উল্লেখ করা হয়েছে। 

আমাদের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র অনেকাংশে কুটির শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। ঢাকাই মসলিন, জামদানি ও খদ্দর আমাদের গর্বের বস্তু। নকশিকাঁথা গ্রামীণ লোকশিল্প হলেও তা সব সময় সমাদৃত হয়ে এসেছে। কুমার পাড়ার মাটির তৈরি জিনিসপত্র আধুনিক সমাজেও প্রচলিত। পিতলের তৈরি বাটি ঘটিও বর্তমানকালে সমাদৃত। বাঁশের ও কাঠের তৈরি আসবাবপত্র চিরকালে ধরে আমাদের সাজসজ্জার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই উদ্দীপকে যে লোকশিল্পের নানামুখী ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে, তা বাংলাদেশের সমগ্র লোকশিল্পেরই প্রতিনিধিত্ব করেছে। পুর্বের পোষ্ট গুলো এখানে

*** আজ এ পর্যন্তই .... আগামিতে আবার নতুন পোষ্ট নিয়ে দেখা হবে। আমার স্কুল দেখুন এখানে।
আমি এখানে...  আল্লাহ্‌ হাফেজ..............

শনিবার, ৯ মার্চ, ২০১৩

৫ম শ্রেনি, বাংলা, লেকচার-১, আমাদের লোক শিল্প

আস্‌সালামুআলাইকুম, সবাই কে অভিনন্দন। আজকে আমরা লেকচার শুরু করব। যা আগে কোন পোষ্ট এ দেই নি। আজ আমার বাংলা বই এর আমাদের লোক শিল্প নিয়ে প্রথম লেকচার। শুরু করি তাহলে....
সকল পোষ্ট গুলো এখানে

আমাদের লোকশিল্প 
লেকচার – ১ 

অধ্যায়টির রচনা পরিচিতি :- 
উত্স: ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধটি পটুয়া কামরুল হাসান রচিত ‘আমাদের লোককৃষ্টি’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। 
মূলবক্তব্য : আমাদের অধিকাংশ লোকশিল্পই আজ বিলুপ্তির পথে। পূর্বে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তার অনেকগুলোই অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল।ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও জামদানি শাড়ি অনেকাংশে সে স্থান দখল করে আছে। বর্তমানে জামদানি শাড়ি দেশে-বিদেশে পরিচিত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশিকাঁথা আমাদের আরেকটি গ্রামিণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ লুপ্তপ্রায় হলেও কিছু কিছু নমুনা এখনো পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেত। কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক একটি পরিবারের কাহিনি, তাদের পরিবেশ, তাদে জীবনগাথা। আমাদের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে। খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প তা সংরক্ষণ করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমরা আমাদের লোকশিল্পের মাধ্যমে নিজস্ব ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি। 

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর : এখন অনুশীলনীর প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। সবাই প্রস্তুত তো......

১. প্রশ্ন : পলাশপুর গ্রামের রহিমা। দরিদ্র হলেও শিল্পী মনের অধিকারী। ছোটবেলা থেকেই সে বাঁশ, বেত দিয়ে সংসারের প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস তৈরি করতো। কিন্তু অচমকা একদিন তার স্বামী মারা গেলে দুই সন্তান নিয়ে পথে বসে রহিমা। উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে সুঁই-সুতা হাতে তুলে নেয় সে। তার সুখ-দুঃখের জীবনালেখ্য রহিমার দীঘল সুতার টানে ভাষা দিতে থাকে। একদিন বেসরকারি একটি সংস্থার মাধ্যমে তার সুচিশিল্পগুলো যায় বিদেশে এবং মোটা অঙ্কের অর্থ প্রাপ্তির পাশাপাশি প্রচুর সুনাম অর্জন করে। 
ক) কোন এলাকার মাদুর সকলের কাছে পরিচিত ? 
খ) ‘ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল দুনিয়া জুরে’ বলতে কী বোঝায় ? 
গ) স্বামীর মৃত্যুর পর রহিমা কাজটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কিসে প্রতিনিধিত্ব করে ? বর্ণনা কর। 
ঘ) দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রহিমার অবদান ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর। 


১ নং প্রশ্নের উত্তর :


ক) উত্তর : খুলনার মাদুর সকলের কাছে পরিচিত। 

খ) উত্তর : উচ্চমান ও অসাধারণ বৈশিষ্ট্যের কারণে ঢাকাই মসলিন এককালে দুনিয়া জুড়ে কদর লাভ করেছিল। 

ঢাকাই মসলিন আমাদের লোকশিল্পের এক প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উপাদান। কারিগরি দক্ষতা ও শিল্পী মনের মিলন ঘটিয়ে অতি সূক্ষ্ণভাবে এটি তৈরি করা হত। ছোট একটি আংটির ভেতর দিয়ে কয়েকশ গজ মসলিন কাপড় অনায়াসে প্রবেশ করানো যেত। এ অসাধারণ বৈশিষ্ট্যর কারণেই দুনিয়াজোড়া তার কদর ছিল। 

গ) উত্তর : উদ্দীপকের রহিমার কাজটি আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধে উল্লেখিত নকশি কাঁথা তৈরির ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে। 
কামরুল হাসান রচিত ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে নকশি কাঁথার কথা বলা হয়েছে। বাংলার বৈচিত্র্যময় লোকশিল্পের অন্যতম নিদর্শন নকশি কাঁথা। গ্রামীণ নারীরা সাধারণত বর্ষাকালে এসব কাঁথা সেলাই করে । আপন পরিবেশ ও জীবনের গল্পকেই তারা সূঁই সুতোর সাহায্যে নকশার রূপ দেয়। 
উদ্দীপকের রহিমাও জীবিকার তাগিদে নকশি কাঁথা তৈরি করে। প্রবন্ধের বর্ণনার মতই নিজের জীবনের কাহিনিকেই সে সূঁই-সুতোর সাহায্যে কাঁথায় আঁকতে শুরু করে। রহিমা দরিদ্র হলেও শিল্পীমনের অধিকারী বলে স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর সে বাঁচার অবলম্বন হিসেবে সুঁই-সুতো হাতে তুলে নেয়। একসময় অর্থের পাশাপাশি এসব নকশিকাঁথা তাকে যথেষ্ট সুনামও এনে দেয়। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে নকশি কাঁথার এ তাত্পর্যের কথাই বলা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় রহিমার কাজটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে উল্লেখিত নকশি কাঁথা তৈরির ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে। 

ঘ) উত্তর : ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের বক্তব্য অনুযায়ী যথাযথ সম্প্রসারণ ঘটাতে পারলে উদ্দীপকের রহিমার অবদান আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। 
আমাদের দেশের মানুষ অবসর কাটানোর জন্যই মূলত লোকশিল্পের চর্চা করে। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে এসব শিল্পের সঠিক ভাবে সম্প্রসারণ করে অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটানো যেতে পারে। ঠিক যেমনটি হয়েছিল উদ্দীপকের রহিমার ক্ষেত্রে। 
উদ্দীপকে রহিমা স্বামীর মৃত্যুর পর উপায় না দেখে সুঁই সুতো হাতে নেয়। নকশি কাঁথায় নিজের জীবন কাহিনি আঁকতে আঁকতে সেও নিজের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়। 
এদেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে লোকশিল্পের সম্পর্ক বেশ পুরোনো। যুগ যুগ ধরে এদেশের কুটির শিল্পের বিভিন্ন জিনিসপত্র নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ঐতিহ্য ও সুনাম ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহেরও ব্যবস্থা হয় এ শিল্পের মাধ্যমে। উদ্দীপকের রহিমার কাজটি একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে পড়ায় সে নিজে এবং দেশের অর্থনীতি উপকৃত হয়। তার তৈরি নকশি কাঁথা বৈদেশিক অর্জনের মাধ্যমে তার অভাব ঘোচাতে সাহায্য করেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এভাবেই রহিমা অবদান রাখছে। 


২. প্রশ্ন : সেঁজুতির স্কুলে চলছিল বার্ষিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা। সেঁজুতি জমা দেয় একটি নকশি কাঁথা। এ কাঁথায় ফুঁটিয়ে তোলে বর্ষা প্রকৃতি এবং বিরহ কাতর একজন নারীর জীবনগাথা। দর্শনার্থী, বিচারক এবং প্রতিযোগী সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখেন এটি। একজন মন্তব্য লেখেন, আমাদের লোকশিল্প যে সমৃদ্দশালী তা বলে শেষ করার মতো নয়। কিন্তু সময় ও রুচির পরিবর্তনে তা আজ প্রায় ধ্বংসের সম্মুখ। আমাদের সকলের এখনই এর প্রতি নজর দেয়া উচিত। নইলে অচিরেই এ শিল্প ধারাকে আমরা হারাব। 

ক) শিল্পগুণ বিচারে আমাদের কুটিরশিল্প কোন শিল্পের মধ্যে পড়ে ? 
খ) বর্ষাকালে নকশি কাঁথা তৈরির জন্য উপযুক্ত সময় কেন ? 
গ) সেঁজুতির এহেন উদ্যোগ আমাদের লোকশিল্পের যে বিশেষ দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে তা ব্যাখ্যা কর। 
ঘ) উদ্দীপকে লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখার যে তাগিদ অনুভূত হয়েছে তা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্যকে সমর্থন করে কি ? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও। 

২ নং প্রশ্নের উত্তর :

ক) উত্তর : লোকশিল্পের মধ্যে পড়ে। 

খ) উত্তর : বর্ষাকালে গ্রামের মেয়েদের ঘর-সংসারের কাজ কম থাকে বলে তা নকশি কাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময়। 
নকশি কাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। গ্রামের সূচি কর্মে নিপুন নারীরা বর্ষনমুখর দিনের অবসরে এসব শৌখিন কাঁথা সেলাই করে। বর্ষাকালে মেয়েদের সংসারে কাজের চাপ কম থাকে বলেই এটি নকশি কাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময়। 

গ) উত্তর : সেঁজুতির উদ্যোগ আমাদের লোকশিল্পের নকশি কাঁথার সৌন্দর্য্য ও ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে। 
বাংলার লোকশিল্পের অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ নিদর্শন হলো নকশি কাঁথা।যুগ যুগ ধরে বাঙালি নারীর শিল্প চেতনা নকশি কাঁথার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। নকশি কাঁথায় সাধারণত নারীরা বর্ষার প্রকৃতি এবং বিরহকাতর জীবনগাথাকে তুলে ধরে। এতে করে এ শিল্পের প্রতি তাদের অকৃত্রিম ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। 
লোকশিল্পের প্রতি ভালবাসাও এর গুরুত্ব অনুধাবনের যে তাগিদ ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে রয়েছে তা উদ্দীপকের সেঁজুতির আচরণে স্পষ্টতই ফুটে উঠেছে। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের বর্ণনার মতই উদ্দীপকের সেঁজুতি লুপ্ত প্রায় লোকশিল্প নকশি কাঁথার কদর বুঝতে পেরেছে। ফলে স্কুলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় সে নকশি কাঁথা উপস্থাপন করেছে। এতে দেশিয় শিল্প ও ঐতিহ্যের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। তার এ উদ্যোগ মূলত আমাদের লোকশিল্পের নকশি কাঁথার সৌন্দর্য্য ও ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করেছে। 

ঘ) উত্তর : উদ্দীপকে লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখার যে তাগিদ অনুভূত হয়েছে, তা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বর্ণিত লেখকের বক্তব্যকে পুরোপুরি সমর্থন করে। 
আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধের লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার কথা এসেছে। এখানে লোকশিল্পের অতীত ঐতিহ্যকে স্মরণ করে এর ভবিষত্ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া একে রক্ষা করার তাগিদও এ প্রবন্ধে দেওয়া হয়েছে। 
উদ্দীপকে উল্লেখিত মন্তব্যে লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার ব্যাপারে সেঁজুতি প্রাণের তাগিদ অনুভব করেছে। পঠিত প্রবন্ধেও লোকশিল্প রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। 
উদ্দীপক ও পঠিত প্রবন্ধের মূল ভাবনা, গ্রামীণ লোকশিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে আমাদের পুরোনো ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে- আমাদের লোকশিল্পের একটি অতীত ঐতিহ্য ছিল এবং আমরা সচেতনভাবে কাজ করলে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। উদ্দীপকের সেঁজুতি এবং মেলার নকশি কাঁথা দেখে মন্তব্যকারী উভয়েই লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ অবুভব করেছে। যা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্যকেই সমর্থন করে। 

নৈর্ব্যতিক : 

১. কোনটি মোঘল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল ? 
(ক) নকশিকাঁথা (খ) ঢাকাই মসলিন√ 
(গ) খদ্দরের কাপড় (ঘ) শীতলপাটি 

২. মসলিনের কারিগরদের বংশধরেরা আজও কোথায় বসবাস করছে ? 
(ক) কুমিল্লা (খ) সিলেট 
(গ) পার্বত্য চট্টগ্রাম (ঘ) নারায়ণগঞ্জ√ 

৩. মসলিনের ঐতিহ্য লালন করছে কোনটি ? 
(ক) নকশিকাঁথা (খ) জামদানি শাড়ি√ 
(গ) টেরা পুতুল (ঘ) শীতল পাটি 

৪. কামালের দেয়া উপহারটিকে শিল্পগুণ বিচারে কোন শ্রেণির অন্তর্ভক্ত করা যায় ? 
(ক) আধুনিক শিল্প (খ) কুটির শিল্প√ 
(গ) চারু শিল্প (ঘ) মৃত্ শিল্প 

৫. এরূপ উপহার দেয়ার পেছনে কামালের উদ্দশ্যকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে বলা যায়- 
i. অর্থ সাশ্রয় করা 
ii. লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা 
iii. ঐতিহ্যকে ধরে রাখা 
নিচের কোনটি সঠিক উত্তর ? 
(ক) i ও ii (খ) i ও iii (গ) ii ও iii√ (ঘ) i, ii ও iii

*** লেকচার এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আবার নতুন লেকচার নিয়ে দেখা হবে তোমাদের সাথে। আল্লাহ্‌ হাফেজ.............. এখানে ঢু মারতে পার

৫ম শ্রেনি, সমাজ, ২য় অধ্যায়-সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ

আস্‌সালামু আলাইকুম, ভাল আছো সবাই। তোমাদের পড়া শোনা কেমন চলছে। ইনশাল্লাহ্‌ ভাল হচ্ছে। আজকের লেসন হল তোমাদের সমাজ বই-এর ২য় অধ্যায়ের প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে। তাহলে দেখানো যাক, আজ কি আছে.......
সকল পোষ্ট গুলো এখানে

দ্বিতীয় অধ্যায় -সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ

১. প্রশ্ন : সম্পদ কাকে বলে ? 

উত্তর : আমরা আমাদের জীবনযাপন ও জীবিকা নির্বাহের জন্যে নানারকম জিনিসপত্র ব্যবহার করে থাকি এবং প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি। সাধারণভাবে এসব জিনিসপত্র ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পদ বলে। যেমন- বাড়িঘর, জমিজমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

২. প্রশ্ন : পারিবারিক সম্পদ কী কী ? 

উত্তর : পারিবারিক সম্পদ : কিছু কিছু সম্পদ আছে যেগুলোর মালিক ব্যক্তি বা পরিবার। একজন ব্যক্তির সম্পদ তার বাড়ি, গাড়ি, জমিজমা, পুকুর, বাগান, কারখানা, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। এসব সম্পদ সে নিজের চেষ্টায় তৈরি করেছে, কিনেছে বা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। এসব সম্পদের ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ ও হস্তান্তর করার অধিকার ঐ ব্যক্তির রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সম্পদের ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ ও হস্তান্তর করার ক্ষমতার অধিকারীকেই আইনগতভাবে সম্পদের মালিক বলে। ব্যক্তির সম্পদই পারিবারিক সম্পদ।

৩. প্রশ্ন : রাষ্ট্রীয় সম্পদকে কেন জনসম্পদ বলা হয় ? 

উত্তর : রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনসম্পদ বলার কারণ : রাষ্ট্র হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় কল্যাণকর সংগঠন। রাষ্ট্র জনগণের ব্যবহার ও কল্যাণের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান, সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলে রাস্তাঘাট, সেতু, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এ ছাড়াও একটি দেশের বিভিন্ন খনিজ সম্পদ ইত্যাদিও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অন্তর্গত। এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করার অধিকার রাষ্ট্রের সকল জনগণের রয়েছে। এজন্য রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনসম্পদ বলা হয়।

৪. প্রশ্ন : বিদ্যালয়কে কেন জাতি গঠনের কারখানা বলা হয় ? 

উত্তর : বিদ্যালয়কে জাতি গঠনের কারখানা বলার কারণ : বিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের সামাজিক সম্পদ। বিদ্যালয় আমাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করে আমরা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হই। যেমন- ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবদিক, সাহিত্যিক, কবি, গীতিকার ইত্যাদি রূপে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি। এজন্য বিদ্যালয়কে জাতি গঠনের কারখানা বলা হয়।

৫. প্রশ্ন : যমুনা সেতু নির্মাণের পর আমাদের কী কী উপকার হয়েছে ? 

উত্তর : যমুনা সেতু নির্মাণের ফলে উপকারিতা : যমুনা সেতু যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। যমুনা সেতু নির্মাণের পর আমাদের যেসব উপকার হয়েছে সেগুলো নিম্নরূপ –

ক) দেশের পূর্ব অঞ্চলের সাথে পশ্চিম অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের সুব্যবস্থা হয়েছে।

খ) অল্প সময়ে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে।

গ) ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হয়েছে।

ঘ) দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা হয় বলে অর্থনৈতিক উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

ঙ) শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নতি হচ্ছে।

পরিশেষে বলা যায় একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন। যমুনা সেতু নির্মাণের ফলে সেই উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।


৬. প্রশ্ন : আমরা আমাদের পরিবেশকে কীভাবে রক্ষা করব ? 

উত্তর : পরিবেশকে রক্ষা করার উপায় : আমাদের আশপাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ।আমরা আমাদের পরিবেশকে নিম্নোক্ত উপায়ে রক্ষা করব –

ক) পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখব।

খ) ঝোপঝাড়, পুকুরের কচুরিপানা ও ড্রেন পরিস্কার রাখব।

গ) খাল খননের ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশন ও সংরক্ষণের সুব্যবস্থা করব।

ঘ) রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।

ঙ) পুল, সাঁকো, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।

চ) খোলা জায়গায়, পার্কের যেখানে সেখানে কাগজপত্র, বোতল, ময়লা ইত্যাদি ফেলব না।

ছ) বাড়িঘর ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলব।

জ) ময়লা যাতে নিয়মিত ডাস্টবিন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখব।

ঝ) গ্রামাঞ্চলে বৃক্ষরোপণ ও তার পরিচর্যা এবং সামাজিক বনায়নে সহায়তা করব।

৭. প্রশ্ন : আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপব্যবহারের একটি উদাহরণ :

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পদের বাইরে একটি দেশের যাবতীয় সম্পদই রাষ্ট্রীয় সম্পদ। আমাদের দেশে বিভিন্ন রকম রাষ্ট্রীয় সম্পদ রয়েছে। যেমন- রাস্তাঘাট, সেতু, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি। এসবের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস একটি অতি মূল্যবান রাষ্ট্রীয় সম্পদ।

প্রায়ই গ্যাসের অপচয় হতে দেখা যায়। অনেক বাড়িতে রান্না শেষ হওয়ার পরও গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা হয় একটি দিয়াশলাইয়ের কাঠি বাঁচানোর জন্য। এছাড়া নানা কারণে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা হয় যা নিঃসন্দেহে অপচয়। এ অপচয়ের ফলে আমাদের গ্যাসের মজুদ দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে। পরিশেষে বলা যায়, রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক সম্পদ ব্যবহার করার অধিকার যেমন সবার আছে, তেমনি এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের দায়িত্ব সমাজের বা রাষ্ট্রের সবার।

***আমার ইস্কুল দেখুন। আজ তাহলে এ পর্যন্তি থাক। আবার আগামি দিন অন্যকোন বিষয় নিয়ে দেখা হবে তোমাদের সাথে। সেই পর্যন্ত বিদায় । ভাল থাকবে সবাই। আমাকে এখানে পাবেন। আল্লাহ হাফেজ.......

৫ম শ্রেনি, সমাজ, ১ম অধ্যায়-এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড

ছোট্ট বন্ধুরা সবাই নিশ্চই ভাল আছো। আজ তোমাদের সমাজ বইএর ১ম অধ্যায়ের কিছু প্রশ্ন উত্তর তুলে ধরবো। তোমাদের লেখা পড়া কেমন চলছে। আবশ্যই আমাকে জানাবা। তোমার ভাল থাকবে ভাল করে পরবে এটাই আমার কামনা। তাহলে আর কথা না বারিয়ে আলোচনায় যায়।


প্রথম অধ্যায় (এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড) 

১. প্রশ্ন : তোমার এলাকার পাঁচটি উন্নয়ন কর্মকান্ডের নাম লিখ। 

উত্তর : আমার এলাকার পাঁচটি উন্নয়ন কর্মকান্ডের নাম : সুস্থ, সুন্দর ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য নিজ এলাকার উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন। আমাদের এলাকার পাঁচটি উন্নয়ন কর্মকান্ডের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো- 
ক) রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণ করা। 

খ) পুল, সাঁকো, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণ করা। 

গ) গাছ লাগানো, পরিচর্যা করা এবং সামাজিক বনায়ন সৃষ্টি করা। 

ঘ) এলাকার পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। 

ঙ) ঝোঁপঝাড়, পুকুরের কচুরিপানা ও ড্রেন পরিস্কার করে মশা নিধনের ব্যবস্থা করা। 

উল্লেখিত কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব। 


২. প্রশ্ন : এলাকার রাস্তাঘাট ভালো না হলে কী অসুবিধা হতে পারে? 

উত্তর : আমরা সারাদিন কেউ নিজগৃহে অবস্থান করি না। আমাদেরকে নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তাই রাস্তাঘাট ভালো হলে আমাদের অনেক সুবিধা হয়। আর রাস্তাঘাট ভালো না হলে নিচে উল্লেখিত অসুবিধাসমূহ হতে পারে : 

ক) আমাদের চলাচলে অসুবিধা হবে। 

খ) মালামাল পরিবহনে বিঘ্ন ঘটবে। 

গ) ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হবে না। ফলে আয় রোজগার বাড়বে না। 

ঘ) সর্বোপরি আমাদের বসবাসের জন্য অসুবিধা হবে। যেমন- সহজে অফিস-আদালতে, স্কুল-কলেজে, হাসপাতালে, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যেতে অসুবিধা হবে। 

এলাকার রাস্তাঘাট ভালো না হলে উল্লেখিত অসুবিধা ছাড়াও নানা ধরনের অসুবিধা হতে পারে। তাই এ ধরনের অসুবিধা এড়ানোর জন্য আমরা আমাদের নিজ নিজ এলাকার রাস্তাঘাট, সাঁকো, সেতু ইত্যাদি যত্ন নেব। 


৩. প্রশ্ন : এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা উচিত কেন? 

উত্তর : এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা উচিত, কারণ : সুন্দর, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ। পরিবেশের অন্যতম উপাদান হচ্ছে গাছ বা বৃক্ষ। 

এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করার প্রয়োজনীয়তা নিচে তুলে ধরা হলো – 

ক) বেঁচে থাকার জন্য : বৃক্ষ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আমরা বৃক্ষ থেকে পেয়ে থাকি। 

খ) জীবনধারণের জন্য : জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান, যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান প্রভৃতি বৃক্ষ থেকে পাই। 

গ) ওষুধ তৈরি : আমাদের জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় ওষুধও বৃক্ষ থেকে পেয়ে থাকি। 

ঘ) মাটির ক্ষয়রোধ : বৃক্ষ মাটির ক্ষয়রোধ করে। 

ঙ) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় : প্রয়োজনীয় গাছ পালার অভাবে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। বৃক্ষ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। 

পরিশেষে বলা যায় গাছপালা পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। উপরিউক্ত কারণে, এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা উচিত। 


৪. প্রশ্ন : এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করা প্রয়োজন কেন? 

উত্তর : এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করার প্রয়োজনীয়তা : পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোনো জীব বাঁচতে পারে না। আর বাঁচার জন্য চাই নিরাপদ পানি। যে পানি পান বা ব্যবহারে স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয় না তাকে আমরা নিরাপদ পানি বলি। এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করার প্রয়োজনীয়তা নিচে আলোচনা করা হলো – 

ক) পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে : নিরাপদ পানির অভাবে বিভিন্ন রকম পানিবাহিত রোগ যেমন – আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড, জন্ডিস ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এসব পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করা প্রয়োজন। 

খ) চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে : আমাদের দেশের কোনো কোনো এলাকার পানিতে আর্সেনিক দূষণ দেখা দিয়েছে। আর্সেনিক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা মাটির নিচে থাকে এবং পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে। আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে হাত ও পায়ের তালুতে এক ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। অতএব এ ব্যাপারে এলাকার লোকজনকে সচেতন করতে হবে। 

উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, নিরাপদ পানির অভাবে আমাদের নানা ধরনের রোগ হতে পারে। তাই এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করে তুলতে হবে। 


৫. প্রশ্ন : এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলের দায়িত্ব কী? 

উত্তর : এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলের দায়িত্ব : আমাদের বসবাসের এলাকা যদি উন্নত না হয়, জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো যদি সেখানে না থাকে অথবা খারাপ অবস্থায় থাকে তাহলে আমাদের অনেক অসুবিধা হয়। তাই এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলের কিছু কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলের পালন করা উচিত এমন কিছু দায়িত্ব নিচে তুলে ধরা হলো – 

ক) আমাদের চলাচলের রাস্তা যদি ভাঙা হয়, এতে যদি গর্ত থাকে তাহলে আমাদের সকলের উচিত রাস্তা মেরামত করা এবং গর্ত ভরাট করা। 

খ) আমাদের চলাচলের রাস্তায় যদি ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকে তবে আমাদের উচিত ঢাকনার ব্যবস্থা করা নতুবা মারাত্মক কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

গ) পুল, সাঁকো, সেতু, কালভার্ট ইত্যাদি নষ্ট থাকলে এগুলো ঠিক করার ব্যবস্থা নিতে হবে। 

ঘ) গাছ লাগাতে হবে, পরিচর্যা করতে হবে এবং সামাজিক বনায়নে আগ্রহী হতে হবে। 

ঙ) পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। 

চ) নিরাপদ পানি পান ও ব্যবহার সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। 

ছ) খাল খনন করে পানি নিষ্কাশন ও সংরক্ষণের সুব্যবস্থা করতে হবে। 

জ) নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। 

ঝ) বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ-পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড গ্রহণ করতে হবে। 


৬. প্রশ্ন : তোমার এলাকায় কিছু লোকের হাত ও পায়ের তালুতে চর্মরোগ দেখা যাচ্ছে – তোমার কী করা উচিত? সে সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর : হাত ও পায়ের তালুতে এক ধরনের চর্মরোগ হওয়া মানেই আর্সেনিক আক্রান্ত হওয়া। আমাদের দেশে কোনো কোনো এলাকার পানিতে আর্সেনিক দূষণ দেখা দিয়েছে। আর্সেনিক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা মাটির নিচে থাকে। এটা পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে। এ পানি নলকূপের মাধ্যমে উপরে উঠে আসে। এই আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে হাত ও পায়ের তালুতে এক ধরনের চর্মরোগ হয়। এ রোগ পরবর্তীতে ক্যান্সার রূপ নিতে পারে। 

আমার যা করা উচিত : আর্সেনিক এর মতো ভয়াবহ রোগ দেখা দিলে আমার যা করণীয় তা নিম্নরূপ : 

ক) আর্সেনিকযুক্ত নলকূপগুলো চিহ্নিত করার জন্য সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বেসরকারি সংস্থাকে জানাব। 

খ) আর্সেনিকযুক্ত নলকূপগুলো লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করব এবং এ ধরনের নলকূপ থেকে পানি পান করা থেকে এলাকাবাসিকে বিরত রাখব। 

গ) আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য এলাকাবাসিকে সচেতন করে তুলব। 

ঘ) এলাকাবাসিকে আর্সেনিকমুক্ত নলকূপের পানি পান করতে বলব। সর্বোপরি, যদি আমার এলাকার লোকজনের হাত ও পায়ের তালুতে চর্মরোগ দেখা যায় তাহলে আর্সেনিকের ভয়াবহতা সম্পর্কে এলাকার সবাইকে অবহিত করব।

আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবে। কিছু যানার থাকলে আমাকে কমেন্ট করে যানাবে। আল্লাহ হাফেজ......

শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৩

৫ম শ্রেনি, বাংলা, ৩য় অধ্যায়- দুখু আর সুখু (২য় অংশ)

সবাই কে সালাম জানাই। পরাশোনা ভাল হচ্ছে সবারই। তাই নয় কি? তো যাক আজ আরেকটি নতুন পোষ্ট দিব। যা তোমাদের ৩য় অধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তর পাওয়া খুব সহজ হবে। তাহলে আর দেরি কেন? দিয়ে দিলাম । ও হ্যা তোমারা কিন্তু সবাই আমাকে কমেন্ট করবে.....

অধ্যায় ৩য় – দুখু আর সুখু 
২য় অংশ 
৮. প্রশ্ন : দুখু বাড়ি ফিরে কী করল ?

উত্তর : ভূমিকা : লোককাহিনী শিশুতোষমূলক হলেও বড়দেরও তা শুনতে ভাল লাগে। ড. মাহবুবুল হক রচিত ‘দুখু আর সুখু’ লোককাহিনী অত্যন্ত মনোহর। গল্পে দুখু চাঁদের বুড়ি কর্তৃক পুরষ্কৃত হয়।

দুখু বাড়ি ফিরে যা করল : দুখু বাড়ি ফিরেই চাঁদের বুড়ির কাছ থেকে পাওয়া গয়নার অর্ধেক সুখুকে দিল।

উপসংহার : দুখুর মনে কোন কুটিলতা ছিল না। বোনের প্রতি তার ছিল অপরিসীম মমতা। তাইতো সে নিজের পুরস্কারের অর্ধেক ছোট বোন সুখুকে দিয়ে দিল।

৯. প্রশ্ন : সুখু গয়না না নিয়ে কী জানতে চাইল ?

উত্তর : ভূমিকা : ড. মাহবুবুল হক রচিত ‘দুখু আর সুখু’ একটি হৃদয়গ্রাহী লোককহিনী। গল্পে দুখু যেমন ছিল নির্লোভ, নিরহঙ্কারী তেমনি তার ছোট বোন সুখু ছিল অলস ও অহঙ্কারী।

সুখু যা জানতে চাইল : সুখু ছিল বড় ডেমাকি। সে দুখুর গয়না দুখুকরে ফিরিয়ে দিল এবং জানতে চাইল সে কীভাবে এত গয়না পেয়েছে।

উপসংহার : আসলে সুখু দুখুর মত উদার মনের ছিল না। দুখুর দেয়া গয়না ফিরিয়ে দিয়ে এবং গয়না পাওয়ার কারণ জানতে চেয়ে সে তার ছোট মনেরই পরিচয় দিয়েছে।

১০. প্রশ্ন : কিছুক্ষণ সুতো কাটার পর সুখু কী ভেবে সুতো কাটা বন্ধ করে দিল ?

উত্তর : ভূমিকা : সুপ্রাচীনকাল থেকে মানুষের মুখে মুখে যেসব গল্প গাথা চলে আসছে সেগুলোকেই লোককাহিনী বলে। ড. মাহবুবুল হক রচিত ‘ দুখু আর সুখু’ এমনই একটি প্রাচীন লোককাহিনী। গল্পে সুখু ছিল অত্যন্ত অলস, অহঙ্কারী ও বদমেজাজি।

সুখু যা ভেবেছিল : কিছুক্ষণ সুতো কাটার পর সুখু যখন দেখল বাতাস জোরে বইসে না তখন সুখু ভাবল খামোখা বসে বসে সুতো কেটে লাভ কী। যখন জোরে বাতাস বইতে শুরু করবে তখন সুতো কাটবে, এই ভেবে সুখু সুতো কাটা বন্ধ করেছিল।

উপসংহার : সুখু ছিল অলস আর লোভী। মসে চেয়েছিল কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করতে। কাজ বন্ধ করে সে তার অলসতারই পরিচয় দিয়েছে।

১১. প্রশ্ন : সুখুর মেজাজ কেন তিরিক্ষ হল ?

উত্তর : ভূমিকা : লোককাহিনীগুলো মূলত মানুষের মুখে মখেই প্রচলিত ছিল। বাংলার এক এক অঞ্চলে এক এক ধরনের লোককাহিনী প্রচলিত ছিল। ড. মাহবুবুল হক রচিত ‘দুখু আর সুখু’ তেমনি কোন অঞ্চলের প্রচলিত প্রাচীন লোককাহিনী। গল্পে সুখুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

সুখুর মেজাজ যে কারণে তিরিক্ষ হল : সুখু ছিল আলসে। সে অল্পতেই হাফিয়ে ওঠে। বাতিসের পিছু পিছু অনেক সময় ধরে দৌড়ে আসার পর যখন দেখল প্রাসাদ অনেক দূরে তখন তার মেজাজ তিরিক্ষ হয়ে উঠল।

উপসংহার : অরস বলেই সুখু অল্পতেই হাফিয়ে ওঠেছে আর পথে সকলের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। অলসেরা কথনো সাফল্য লাভ করতে পারে না এ কথা চিরন্তন সত্য।

১২. প্রশ্ন : সুখু বুড়ির দরজা কীভাবে খুলল ? সে চেঁচিয়ে বুড়িকে কী বলেছিল ?

উত্তর : ভূমিকা : ড. মাহবুবুল হক তাঁর ‘দুখু আর সুখূ’ লোককাহিনীতে চমত্কারভাবে সুখু চরিত্রের দিকগুলো তুলে ধরেছেন। সুখু ধৈর্যশীল ছিল না, ছীল অলস আর লোভী। বুড়ির প্রতি সে রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।

সুখু যে ভাবে দরজা খুলল এবং বুড়িকে যা বলল : সুখু প্রাসাদের সামনে এসেই লাথি দিয়ে বুড়ির দরজা খুলল। তারপর চেঁচিয়ে উঠে বলল : ‘মড়ামুখী বুড়ি, জলদী আমার গয়নার ব্যবস্থা কর’।

উপসংহার : সুখুর মন দুখুর মত সরল ছিল না। লাথি দিয়ে দরজা খুলে সে তার বদমেজাজের পরিচয় দিয়েছে। আর এ জন্যই সে সব কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

১৩. প্রশ্ন : গল্পটি পড়ে তোমরা কী শিখলে ?

উত্তর : বাংলাদেশের লোককাহিনী থেকে সংগৃহীত ও ড. মাহবুবুল হক কর্তৃক পূনর্লিখিত গল্প ‘দুখু আর সুখু’।

সদাচারণের কারণে মানুষের ভাগ্যের যে পরির্বতন হতে পারে তাই মূলত এ গল্পের শিক্ষা।

এ গল্পের দুটি প্রধান চরিত্র দুখু আর সুখু। তারা কৃষক পরিবারের সন্তান। দারিদ্র্য তাদের নিত্য সঙ্গী। ফলে অতি কষ্টে তাদের দিন কাটে। এ দু’বোনের মধ্যে বড় দুখু আর ছোট সুখু। আচারণের দিক থেকেও তাদের মধ্যে একটি বিরাট ব্যবধান বিদ্যমান। দুখু হল শান্ত আর কাজে পটু। অপরদিকে সুখু বদমেজাজী আর আলসে।

দুখু তার শান্তি প্রিয় মনোভাবের পুরস্কার পেয়েছিল অসংখ্য। সে গাই, কলাগাছ ও ঘোড়ার অনুরোধ রক্ষা করে। বুড়ির সাথে ভাল ব্যবহার করে। তার কথার অবাধ্য হয়নি। ফলে তার অর্জনও ছিল বিশাল। এদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নানা উপহার সামগ্রী দুখুর দুঃখ দূর করে তাকে সুখী করে তোলে। অপরদিকে সুখু দুখুর এ বিশাল অর্জনে ঈর্ষান্বিত হয়। তাই দুখুর চেয়ে বেশি পাবার লোভে সে ছুটে চলে। পরে গাই, কলাগাছ ও ঘোড়ার সাথে তার যথারীতি দেখা হয়। কিন্তু সে তাদের করো কোন অনুরোধ রখেনি। এমনকি বুড়ির বাড়িতে পৌঁছে তার আচারণটাও ছিল ভীষণ উগ্র। সর্বোপরি বুড়ির আদেশ অমান্য করে সে পানিতে তৃতীয় ডুব দেয়। এতে তার প্রাপ্তি হল উল্টো।

পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষ স্বভাবে সুন্দর হলে, সদাচারণ করলে ভালোবাসা পাওয়া যায়।পরিণামে সুখ আসে। আর তা না হলে নিজেই নিজের ভাগ্য রচনা করে সংসারে জনম দুঃখী হয়ে থাকতে হয়। আলোচ্য গল্পে মূলত এ নীতিকথাই শিক্ষা দেয়া হয়েছে।

৫ম শ্রেনি, বাংলা, ৩য় অধ্যায়- দুখু আর সুখু

সবাই কে সালাম জানাই। পরাশোনা ভাল হচ্ছে সবারই। তাই নয় কি? তো যাক আজ আরেকটি নতুন পোষ্ট দিব। যা তোমাদের তয় অধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তর পাওয়া খুব সহজ হবে। তাহলে আর দেরি কেন? দিয়ে দিলাম । ও হ্যা তোমারা কিন্তু সবাই আমাকে কমেন্ট করবে.....


অধ্যায় ৩য় – দুখু আর সুখু
১ম অংশ

১. প্রশ্ন : চাষীর কয় মেয়ে ? তাদের কার কী নাম এবং কার কেমন স্বভাব ?

উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশের লোককাহিনী থেকে সংগৃহীত ও পুনর্লিখিত এ ‘দুখু ও সুখু’ নামক গল্পটি।

কার কী নাম এবং স্বভাব : গল্পে বর্ণিত চাষির দুই মেয়ে। তাদের নাম হল ‘দুখু আর সুখু’।
দুখু বড় আর সুখু ছোট । নামের সাথে তাদের স্বভাবের বেশ পার্থক্য বিদ্যমান। দুখু হল শান্ত আর কাজে পটু। অপরদিকে সুখু খুবই বদমেজাজি আর আলসে। 



২. প্রশ্ন : দুখুর তুলো উড়ে গেল কীভাবে ?

উত্তর : ভূমিকা : ড. মাহবুবুল হকের ‘দুখু আর সুখু’ একটি নীতিতত্ত্বমূলক লোককাহিনী।

যে ভাবে তুলো উড়ে গেল : গল্পে বর্ণিত চাষির মেয়ে দুখু কঠোর পরিশ্রমী ও বিনয়ী স্বভাবের। একদিন সে উঠানে চনকায় সুতো কাটছিল। হঠাত্ প্রচন্ড বাতাস বয়ে যায় এবং দুখুর সব তুলো বাতাসে উড়ে যায়। দুখু চরকায় সুতো কেটে চাষি পিতাকে উপার্জনে সাহায্য করতো। এ ক্ষতিতে উপায়ান্তর না দেখে কোমল অন্তরের দুখু কাঁদে এবং বাতাসের পিছে ছুটে যায়।

৩. প্রশ্ন : তুলোর পিছে ছুটতে ছুটতে কার সাথে দুখুর প্রথম দেখা হল এবং কী ঘটল ?

উত্তর : ভূমিকা : শৈশব থেকেই আমরা নানা-নানির মুখে অনেক লোককাহিনী গল্প শুনে আসছি। এগুলো শুনতে ভারী মজার। লোককাহিনী গুলো আমাদের মনে আনে কল্পরাজ্যের রোমাঞ্চকর অনুভূতি। ড.মাহবুবুল হা রচিত ‘দুখু আর সুখু’ তেমনি একটি লোককাহিনী।

প্রথম যার সাথে দেখা হল : তুলোর পিছে ছুটতে ছুটতে প্রথমে দুখুর গাই- এর সাথে দেখা হল।

যা ঘটল : গাই দুখুকে ডেকে তার গোয়ালটা একটু পরিস্কার করে দিতে বলল। দুখু তখন কুয়ো থেকে পানি এনে ঝাঁটা দিয়ে ধুয়ে গোয়ালটা তকতকে করে সাফ করল। এতে গাভী খুব খুশি হল।

উপসংহার : দুখুর মনে কোন অহংকার ছিল না। সে ছিল নিবেদিত প্রাণ। তার মনটা ছিল সহজ সরল। তাইতো সে কোন প্রশ্ন না করে অনায়াসে গাই-এর গোয়ালটা পরিস্কার করে দিল।

৪. প্রশ্ন : কলা গাছের সঙ্গে দুখুর দেখা হওয়ার পর কী ঘটল ?

উত্তর : ভূমিকা : ড. মাহবুবুল হকে রচিত ‘দুখু আর সুখু’ একটি অনবদ্য লোককাহিনী। গল্পে দুখুর তুলো যখন বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায় তখন তুলোর পেছনে যেতে যেতে অনেকের সাথে তার দেখা হয় এবং তাদের অনুরোধ রাখে। শেষে কলা গাছের অনুরোধও সে রাখে।

কলা গাছের সাথে দেখা হওয়ার পর যা ঘটল : কলা গাছের সাথে দেখা হওয়ার পর কলাগাছ দুখুকে ডেকে তার গায়ে জড়িয়ে থাকা আগাছা আর লতাপাতা ছাড়িয়ে দিতে বলল। দুখু তার লতাপাতা আর আগাছা ছাড়িয়ে দিল।

উপসংহার : দুখি কর্মট আর পরোপকারী তা ফুটে উঠেছে তার কাজের মধ্য দিয়ে।

৫. প্রশ্ন : ঘোড়ার সঙ্গে দুখুর দেখা হওয়ার পর কী ঘটল ?

উত্তর : ভূমিকা : সুসাহিত্যিক ড. মাহবুবুল হকের ‘দুখু আর সুখু’ গল্পটি বাংলাদেশের লোককাহিনীর অন্তর্গত। লোকমুখে প্রচলিত লোককাহিনী সাধারণত নৈতিক উপদেশমূলক হয়ে থাকে। এ গল্পটি তার ব্যতিক্রম নয়।

দুখু যে কর্মঠ তা ফুটে ওঠে : চাষির মেয়ে দুখু তুলো আনতে ছুটছে বাতাসের পিছু পিছু। এভাবে ছুটতে ছুটতে তার সাথে দেখা হল একটি ঘোড়ার সাথে। দুখুকে দেখে ঘোড়াটি অনুনয় করে বলল, ‘লাগাম আর জিনপোশ আমার পিঠ কেটে বসেছে। ঘাস খাবতো নিচু হতে পারছি না। ওগুলো একটু খুলে দিবি মা ?’ আর তাই শুনে সরলমনা দুখু সব ভুলে ঘোড়াকে বাঁচাতে জিনপোকা খুলে দিল। এতে ঘোড়া খুব খুশি হল এবং এ উপকারের কথা মনে রাখবে বলে অঙ্গিকার করল।

উপসংহার : নীতিশিক্ষামূলক এ লোককাহিনীতে উপকারী হিসেবে দুখু চরিত্রটি উপস্থাপিত হয়েছে। 

৬. প্রশ্ন : ফেরার পথে দুখু কার কার কাছ থেকে কী কী উপহার পেয়েছিল ?

উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশের লোককাহিনী অবলম্বনে ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত গল্প ‘দুখু আর সুখু’। এ গল্পে দুখুর সদাচারনণের পুরস্কার লাভ সম্পর্কে চমত্কার এক শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

ফেরার পথে দুখু কার কাছ থেকে কী উপহার পেল : একদিন জোরে বাতাস প্রবাহিত হলে দুখুর তুলা উড়ে যায়। সে ভীষন ব্যথিত হয়ে পিছু পিছু ছুটল। পথে তার দেখা হয় গাই, কলাগাছ ও ঘোড়ার সাথে। তার দুখুকে বিভিন্ন অনুরোধ করে। দুখুর ভীষন কষ্ট হলেও সে সব কাজই সুষ্ঠভাবে সেরে দেয়। ফলে তারা দুখুর প্রতি খুবই সন্তুষ্ট হয়। বাতাসের পরামর্শে সে বুড়ির ঘরে পৌঁছালে সে তার পরামর্শ মোতাবেক কাজ করে। ফেরার পথে তারে আবার দেখা হয় গাই, কলাগাছ ও ঘোড়ার সাথে। এরা দুখুর প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। ঘোড়া দেয় একটি পক্ষীরাজের ছানা, কলাগাছ দেয় সোণার বরণ এক ছড়া কলাসহ এক খড়া মোহর এবং গাই দেয় কপিলা গাইয়ের বকনা, যার বাঁনে কখনও দুধ শুকায় না।

উপসংহার : আর এভাবে দুখু পরোপকারের প্রতিদান পেল।

৭. প্রশ্ন : প্রাসাদের কাছাকাছি এসে বাতাস দুখুকে কী বলল ?

উত্তর : ভূমিকা : রূপকথা জাতীয় উপদেশমূলক ‘দুখু আর সুখু’ নামের গল্পটি ড. মাহবুবুল হকের একটি শিশুতোষ রচনা। এখানে গল্পচ্ছলে সুন্দর ও সত্ স্বভাবের বিজয় দেখানো হয়েছে।

বাতাস যা বলল : বাতাস দুখুর তুলো উড়িয়ে নিয়ে গেল। দুখু বাতাসের পেছনে ছুটছেতো ছুটছেই। ছুটতে ছুটতে দুখু ক্লান্ত। এমনি সময়ে চলতে চলতে বাতাস এক জায়গায় এসে থামল। থেমে বাতাস দুখুকে দূরে একটি প্রাসাদ দেখিয়ে বলল, ‘ঐটিই হল চাঁদের মা বুড়ির প্রাসাদ। সে আরও বলল, ওর কাছে গিয়ে তুলো চাইবে।যত চাইবে তত তুলো দেবে সে তোমাকে’।

উপসংহার : দুখু মেয়েটি হারানো তুলোর পেছনে ছুটছিল আর বাতাস তাকে পৌছে দেয় চাদের মা বুড়ির কাছে। তার কাছে যত খুশি তত তুলো চেয়ে নিতে পারে দুখু। এতে দুখু পুলকিত হল। তার হৃদয় আনন্দে নাচতে শুরু করল।

৫ম শ্রনি, বাংলা, ২য় অধ্যায়- আয়াঢ়(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

হ্যালো ছোট্ট বন্ধুরা কেমন আছো? নিশ্চয় ভাল আছো। তোমাদের পরাশুনা কেমন হচ্ছে? ভাল করে পরাশোনা কর। সামনে তোমাদের psc পরিক্ষা । প্রিপারেশন ভাল করে নাও। আজ আমি তোমাদের বাংলা বই এর ২য় অধ্যায়ের প্রশ্ন নিয়ে উত্তর করবো। নিশ্চই তোমাদের ভাল লাগবে। এবং উপকৃত হবে। ভাল লাগলে আমাকে কমেন্ট করে যানাবে.....


২য় অধ্যায় : আষাঢ় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

১. প্রশ্নঃ আষাঢ় মাসে আকাশ কেমন দেখা যায় ? 

উত্তরঃ ভুমিকা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আষাঢ়’ কবিতায় বর্ষায় বাংলা প্রকৃতির রূপ অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে । 

আমাদের আকাশ : ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ । এর দ্বিতীয় ঋতু হল বর্ষা । সে যেন সবাইকে জানান দিয়ে আসে । এ সময় নীল আকাশ আর নীল থাকে না । নতুন মেঘে সারা আকাশ ঢেকে যায় । তিল ধারণ করার মতো এতটুকু জায়গা কোথাও থাকে না । এ রূপ পরিবেশের মেঘাচ্ছন্ন আকাশ তার চিরাচরিত রূপ হারিয়ে নতুন সাজে হাজির হয় ।


উপসংহার : আষাঢ়ের ঘন কালো মেঘ থেকে বৃষ্টির সৃষ্টি হয় । আষাঢ়ের অঝোর বৃষ্টি প্রকৃতির বুকে প্রাণ সঞ্চার করে । 

২. প্রশ্নঃ আউশের ক্ষেত কীভাবে জলে ভরে যায় ? 

উত্তর : ভূমিকা : ‘আষাঢ়’ শীর্ষক কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আষাঢ়ের বর্ষার কৃষকের আউশ ধানের ক্ষেত কীভাবে জলে ভরে যায় তা আমাদের সামনে সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন । 

আউশের ক্ষেত যেভাবে জলে ভরে যায় : আমাদের এ দেশ ঋতুবৈচিত্রের দেশ । আষাঢ় মাসে বর্ষা আগমন ঘটে । এ সময় আকাশ ঘন কলো মেঘে ছেয়ে যায় । টাপুর টুপুর শব্দে সারাদিন অবিরাম বৃষ্টি ধারা চলে । চারিদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে । বৃষ্টির দিনে আকাশে চলে আলো-ছায়ার খেলা । এ সময় বন, মাঠ-ঘাট, কৃষকের আউশের ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে ভরে যায় । 

উপসংহার : আষাঢ়ের বৃষ্টি ধারা তপ্ত, বিষণ্ন প্রকৃতিকে সজল স্নিগ্ধ করে পথ-ঘাট প্লাবিত করে । ফসলের মাঠ জলে ভরে ওঠে । 

৩. প্রশ্ন : কৃষক কী জন্য এত উদ্বিগ্ন ? 

উত্তর : ভূমিকা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আষাঢ়’ কবিতায় বর্ষায় বাংলা প্রকৃতির বিচিত্র রূপ ফুটে ওঠে । বিশেষ করে স্বাভাবিক জীবন যাত্রার মাঝে বর্ষার প্রভাব এখানে ভিন্ন রূপে ধরা দেয় । 

কৃষক উদ্বিগ্ন হবার কারণ : বর্ষার আকাশ ঘন মেঘে ঢেকে যায় । কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না । সারাদিন আবিরাম জলধারায় চারিধার অথৈ জলে ভরে যায় । তখন নদী-নালা, খাল-বিল, লোকালয় সব একাকার হয়ে যায় । কালো মেঘে আকাশ ঢাকা আসন্ন ইংগিত বহন করে । এমন সময় ঘরের বাহিরে থাকা মোটেই নিরাপদ নয় । তাই মাঠ থেকে গাভীটিকে গোহালে আনা ও যারা ঘরের বাহিরে রয়েছে তাদের ঘরে ফিরে আসার বিষয়টি নিয়ে পরিবারের প্রধান বা দায়িত্বশীল কৃষক উদ্বিগ্ন থাকে ।


৪. প্রশ্ন : গাভীটি এত ঘন ঘন ডাকছে কেন ? 

উত্তর : ভুমিকা : বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আষাঢ়’ শীর্ষক কবিতায় এ দেশের গ্রামবাংলার বর্ষা-প্রকৃতির বিভিন্ন দিক নিয়ে বর্ণনা করেছেন । তিনি এ কবিতায় একটি গাভীর কথাও উল্লেখ করেছেন । 

গাভীটি এত ঘন ঘন ডাকার কারণ : আষাঢ় মাস বর্ষার মাস । এ আকাশা কালো মেঘে ঢেকে যায় । সারাদিন অবিরাম বৃষ্টি ঝরে । এ সময় বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না । কৃষক তার গাভীটিকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মাঠে দিয়ে এসেছিল । প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে সে তার গাভীটিকে খুঁজে বাড়ি নিয়ে আসে । একদিন সন্ধ্যায় চারদিক অন্ধকার হয়ে বৃষ্টি নেমেছিল বলে কৃষক আসার জন্য এত ঘন ঘন ডাকছে । 

উপসংহার : প্রত্যেকটি প্রাণীই সন্ধ্যা হলে যার যার নীড়ে ফিরে যেতে চায় । কৃষকের গাভীটিও সন্ধ্যায় বাড়ি আসার জন্য এত ঘন ঘন ডাকছিল । 

৫. প্রশ্ন : রাখাল বালকের জন্য এত চিন্তা কেন ? 

উত্তর : ভূমিকা : বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আষাঢ়’ নামক কবিতায় গ্রাম বাংলার এক রাখাল বালকের কথা ব্যক্ত করেছেন । 

রাখাল বালকের জন্য চিন্তার কারণ : আষাঢ় মাসে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে থাকে । রাখাল ছেলে মাঠে গেছে তার গাভীটিকে আনতে । বেলা পোহালে আঁধার নেমে আসবে, সেই সাথে বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা । রাখাল বালক ফিরছে না দেখে রাখাল বালকের জন্য এত চিন্তা । 

উপসংহার : গ্রাম বাংলার মানুষ সহজ-সরল ও সহানুভূতিপ্রবণ । তারা একে অপরের প্রতি হৃদয়ের টান অনুভব করে । তাইতো কৃষকের সহজ-সরল মন রাখাল বালকের জন্য এত চিন্তিত । 

৬. প্রশ্ন : খেয়া পারাপার বন্ধ হওয়ার কারণ কী ? 

উত্তর : ভূমিকা : ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ । এ দেশে যে কয়টি ঋতু আছে সবাইকে জানান দিয়ে আসে, তার মধ্যে ‘বর্ষা’ অন্যতম । আষাঢ় ও শ্রাবন এই দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল । কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আষাঢ় কবিতায় এ বর্ষালের আসল রূপ ফুটে উঠেছে । 

খেয়া পারাপার বন্ধের কারণ : বর্ষার আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায় । সারাদিন বাদলের ধারা অবিরাম গতিতে ঝরতে থাকে । চারদিক জলে থৈথৈ করে । তখন গ্রামীণ মানুষ জলবন্দী হয়ে পড়ে । ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার কোনো উপায় থাকে না । বর্ষার জল নদীর জলের সাথে একাকার হয়ে গিয়ে নদী ফুঁসে ওঠে । ফলে নদী তার চিরাচরিত রূপ বদলে ধরা দেয় বিদ্রোহী রূপে । তাই নদী পারাপারের মাধ্যম খেয়া বন্ধ হয়ে যায় । মাঝি জীবন ঝুঁকি নিয়ে পারাপারের সাহস পায় না । আর তাই সন্ধ্যার আগেই খেয়া বন্ধ করে দেয় । 

উপসংহার : মূলত বর্ষার ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগই খেয়া পারাপার বন্ধের কারণ । 

৭. প্রশ্ন : গ্রামবাংলার বর্ষা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখ । 

উত্তর : বর্ষায় গ্রামবাংলা অপরূপ সাজে সেজে ওঠে । টাপুর টুপুর বৃষ্টিতে নেয়ে ওঠে গ্রামবাংলার প্রকৃতি । সারাদিন আকাশে চলে মেঘের লুকোচুরি খেলা । এ সময় ধানের ক্ষেত জলে ভরে যায় । বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হবার কোনো উপায় থাকে না ।

আজ এ পর্যন্তই। মনে হয় তোমাদের সাহায্য করতে পেরেছি। কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে যানাবে। আল্লাহ হাফেজ..........................

বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৩

৫ম শ্রেনি,বাংলা, ১ম অধ্যায় (২য় অংশ)- আমাদের এই দেশ


আস্‌সালামুআলাইকুম, ছোট্ট বন্ধুরা তোমরা সবাই নিশ্চয় ভাল আছো। আনেক পরাশোনা নিয়ে ব্যস্তা আছো। তোমাদের জন্য আজ আমি আইটি স্কুলের ১ম অধ্যায়ের ২য় অংশ পোষ্ট শুরু করছি। নিশ্চই আমি তোমাদের সাহায্য করতে পারব ইনশাল্লাহ্‌........................


অধ্যায় : আমাদের এই দেশ
২য় অংশ

৬. প্রশ্ন : কখন নবান্ন উত্সবে সবাই মেতে ওঠে ? এ দেশের কয়েক প্রকার ধানের নাম লিখ । 

উত্তর : ভূমিকা : আমাদের এ দেশকে বলা হয় প্রকৃতির রূপসী কন্যা । এ দেশের কৃষকেরা বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ধান চাষ করে । ধানের দেশ গানের দেশ আমাদের এ বাংলাদেশ । 

যখন নবান্ন উত্সবে হয় : বিচিত্র উত্সবের দেশ বাংলাদেশ । নানাবিধ সাংস্কৃতিক উত্সবের পাশাপাশি অন্যতম একটা উত্সব ‘নবান্ন উত্সব’।
হেমন্তে ঘরে ঘরে আসে নতুন ধান । এ ধানের চালে তৈরি হয় নানা রকমের পিঠা ।সেই সাথে চলে উন্নতমানের খাবারের আয়োজন । নতুন ধান ওঠার পর সবকিছু মিলিয়ে যে উত্সবের সাড়া পরে কৃষক পল্লীতে মূলত তাই নবান্ন উত্সব । হেমন্তে নবান্ন উত্সবে সবাই মেতে ওঠে আনন্দে আর গানে গানে । 

ধানের নাম : এ দেশের উর্বর মাটিতে জন্মে নানা রকমের ধান । এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল : পাইজাম, নাজিরশাইল, বিন্নি, কাটারিভোগ, বালাম, বিরি, বাসমতি, মানিকশোভা, কালিজিরা, বাদশাভোগ ইত্যাদি । 

উপসংহার : হেমন্তকালের নতুন ধানের মিষ্টিগন্ধে আমোদিত হয়ে কৃষকেরা নবান্ন উত্সবে মেতে ওঠে । 
                                 

৭. প্রশ্ন : আমাদের দেশের মেয়েরা অবসর সময়ে কী কী জিনিস তৈরি করে ? 

উত্তর : ভূমিকা : আমাদের দেশের মেয়েদের জীরন সহজ সরল । এরা শৈল্পিক চেতনার অধিকরী । অবসরে এরা নানা ধরনের শৌখিন জিনিস তৈরি করে থাকে । 

আমাদের দেশের মেয়েদের অবসর সময়ে তৈরি জিনিসপত্র : আমাদের দেশের মেয়েরা অবসর সময়ে যেসব জিনিসপত্র তৈরি করে সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হল :- 

নকশি শিকা : পাটের আঁশ বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে তা দিয়ে মেয়েরা তৈরি করে নকশি শিকা । সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও আকর্ষণীয় করার জন্য শিকায় ঝিনুকের বোতাম, কড়ি ও পুঁতি লগানো হয় । 

নকশি কাঁথা : বাংলার মেয়েরা কাজের অবসরে সুচ ও সুতো দিয়ে সেলাই করে নকশি কাঁথা । লতাপাতা, ফুল, ধানের ছড়া, চাঁদ, তারা, পাখি ও আরও বহু প্রকার কারুকাজ ফুটিয়ে তুলে নকশি কাঁথায় । 

নকশি পাখা : রঙিন সুতো দিয়ে মেয়েরা তৈরি করে নকশি পাখা । সুতোর বুননে ফুল, পাখি, গাছ ও পাতার নকশা ফুটিয়ে তুলে নকশি পাখায় । 

শীতল পাটি : মেয়েরা বেত দিয়ে বোনে শীতল পাটি । রঙিন বেতের বুনতে শীতল পাটিতে ফুটিয়ে তো‌লে পাখি, পালকি, মসজিদ, নৌকা, বাঘ, হরিণ ও বিভিন্ন ফুলের নকশা । 

উপসংহার : বাংলাদেশের মেয়েরা হস্তশিল্পে ও কুটির শিল্পে খুবই দক্ষ । তারা তৈরি করে আন্তর্জাতিক মানের সৌখিন জিনিস । যা দেশের মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি করে । এসব জিনিস তৈরির মাধ্যমে তাদের শৈল্পিক চেতনার বিকাশ ঘটে । 

৮. প্রশ্ন : কয়েক প্রকার বিখ্যাত কাপড়ের নাম লিখ । 

উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের মানুষ কাপড় বোনার জন্য বিখ্যাত । এ দেশের মানুষ তাদের আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে বিভিন্ন রঙের কাপড় তৈরি করে । 

বিভিন্ন প্রকার বিখ্যাত কাপড়ের নাম : এক কালে এ দেশে মূ্ল্যবান মসলিন কাপড় তৈরি হত । তাঁতিরা এখনও রেশমি, জামদানি ও সুতি কাপড় বোনে । মসলিন, রেশম, তসর, গরদ, মুগা, মটকা, জামদানি, টাঙ্গাইল ও বালুচরী এ দেশের বিখ্যাত কাপড় । 

উপসংহার : কালের অনিবার্য প্রবাহে মসলিন কাপড় হারিয়ে গেলেও রেশম, তসর, গরদ, মুগা, মটকা, জামদানি, টাঙ্গাইল ও বালুচরী আজও এ দেশের অতীত গৌরবের ঝাণ্ঢা বহন করে চলেছে । 

৯. প্রশ্ন : বাংলাদেশের কামার-কুমোরেরা কী কী জিনিস তৈরি করে । 

উত্তর : বাংলাদেশের কামার-কুমোর, জেলে-তাঁতি, কৃষক-শ্রমিক বিভিন্ন পেশার লোক বাস করে । এসব পেশার লোকজন পরিশ্রমী ও উদ্যমী । 

কামারের তৈরি জিনিস : কৃষকের লাঙলের ফাল, মাঠে নিড়ানি দেয়ার কাস্তে, কাঁচি, হাতুরী, কুরাল গৃহিণীদের জন্য দা, খন্তা, কাঠ কাটার কুড়াল ইত্যাদি অনেক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করে তারা মানুষের উপকার করে থাকে । 

কুমোরের তৈরি জিনিস : কুমোর গড়ে মাটির হাঁড়ি- পাতিল ও তৈজসপত্র । তারা মাটি দিয়ে ফুল, পাখি, পুতুল ও পোড়ামাটিতে ফলক তৈরি করে । ঘরের কুলঙ্গী ও দেয়াল সাজাবার কাজে ব্যবহার করা হয় পোড়ামাটির ফলক । 

উপসংহার : কামার-কুমোরের তৈরি জিনিসপত্রের কদর দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে । এসব জিনিসপত্র আমাদের ঘর-গেরস্থলির প্রয়োজনই শুধু মেটায় না, শিল্পগুণেরও ঐতিহ্য বহন করে । 

১০. প্রশ্ন : কয়েকটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নাম লিখ । 

উত্তর : কয়েকটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নাম : সবুজ শ্যামলিমায় ঘেরা বিস্তীর্ণ সমতল ভূমি ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশের হৃদয় জুড়ে । অন্যদিকে আছে ঘন সবুজ গাছে ঘেরা পাহাড়ি টিলা । রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবনে বাস করে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ । আমাদের দেশের কয়েকটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তা মানুষ । আমাদের দেশের কয়েকটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নাম হল – চাকমা, মুরং, মারমা, লুসাই, গারো প্রভৃতি ।


৫ম শ্রেনি,বাংলা, ১ম অধ্যায়- আমাদের এই দেশ


আস্‌সালামুআলাইকুম, ছোট্ট বন্ধুরা তোমরা সবাই নিশ্চয় ভাল আছো। আনেক পরাশোনা নিয়ে ব্যস্তা নিশ্চই। তোমাদের জন্য আজ আমি আইটি স্কুলের পোষ্ট শুরু করছি। ইনশাল্লাহ নিয়মিত পোষ্ট করে যাব। তোমাদের উপকার হবে। তোমাদের পরিক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে অধ্যায় ভিত্তিক আলোচনা করব। নিশ্চই আমি তোমাদের সাহায্য করতে পারব ইনশাল্লাহ্‌........................ 

অধ্যায় : আমাদের এই দেশ
১ম অংশ


১. প্রশ্নঃ বাংলাদেশ শহরের একটি বর্ণনা লিখ।

উত্তরঃ ভুমিকা : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এটি একটি বিশাল শহর । এ ছাড়া এ দেশে ছোট বড় অনেক শহর আছে । অবস্থাগত ও ব্যবসায়িক গুরুত্বের কারণে শহরগুলোর মধ্যে কম বেশি পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।

শহরের বর্ণনা : বাংলাদেশের শহরের বিশাল অট্টালিকাগুলো ইট, কাঠ আর পাথর দিয়ে তৈরি । পিচ ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি রাস্তাগুলো বেশ চওড়া । পাকা রাস্তার দুপাশ দিয়ে অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে । আর রাস্তার পাশের ফুটপাত দিয়ে চলাচল করে পথচারী । শহরের মানুষ বিচিত্র কাজে ব্যস্ত থাকে । কেউ অফিস আদালতে কাজ করে, কেউ করে ব্যবসা-বাণিজ্য । শ্রমিকেরা কাজ করে কলকারখানায় ।এ ছাড়া নানা পেশার মানুষ জীবিকার জন্য শহরে এসে ভির করে । উচ্চ শিক্ষার জন্য শহরে আছে উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । জটিল রোগ নির্ণয় ও উন্নত মানের চিকিত্সার জন্য আছে আধুনিক হাসপাতাল ও ক্লিনিক । খেলাধুলার জন্য রয়েছে স্টেডিয়াম । বিনোদনের জন্য শহরে রয়েছে পার্ক ও উদ্যান । ফলে অবসর সময়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শহরের লোকজন গাছপালা ও ফুলে ফুলে সাজানো পার্কে বেড়াতে যায় ।

উপসংহার : অট্টালিকায় ঘেরা শহরের মানুষের জীবনযাত্রা খুবই ব্যস্ত । এ ব্যস্তজীবন কাটানোর পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে ।




২. প্রশ্নঃ বাংলাদেশের শহরে ও গ্রামে কী কী ধরনের বাড়িঘর তৈরি হয় ?

উত্তর : ভূমিকা : পরিবেশ, প্রকৃতি এবং অর্থনৈতিক কারনে শহর ও গ্রামের বাড়িঘর ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে । ‘আমাদের এই দেশ’ গল্পে লেখক বাংলাদেশের শহর ও গ্রামের বাড়িঘরের সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন ।

শহরের বাড়িঘর : শহরে মূলত পাকা ও বহুতল বিশিষ্ট উঁচু উঁচু দালান-কোঠা তৈরি হয় । এসব দালান-কোঠা ইট, কাঠ, পাথর, বালি, রড ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি । কোনো কোনো বাড়িতে উন্নতমানের কাচ বা গ্লাস ব্যবহৃত হয় । থাই অ্যালুমিনিয়াম ফিটিংসের দরজা-জালানা শহরের দালানগুলোকে বর্তমানে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে ।

গ্রামের বাড়িঘর : আম, জাম, কাঁঠাল ও বাশঁবনের নিবিড় ছায়ায় ঘেরা বাংলাদেশের এক একটি গ্রাম । এ দেশের গ্রামগুলোতে রয়েছে নানা ধরনের ঘর-বাড়ি । এগুলো শহরের দালান-কোঠার মতো ইট, কাঠ ও পাথরের তৈরি নয় । গ্রামের অধিকাংশ ঘরগুলো কাঠামো কাঠ ও বাঁশের তৈরি । চাল ছাওয়া হয় ছন, খড়, গোলপাতা ও হোগলাপাতা দিয়ে । বাঁশের চঁচাড়ি, পাটকাঠি বা মাটি দিয়ে তৈরি হয় চারপাশের দেয়াল ।

ঘরামিরা ছন ও খড় দিয়ে ছাওয়া যেসব দোচালা, চৌচালা ঘর বানায় সেগুলো ভারি চমত্কার । বাঁশের চাঁচাড়ি, বেত ও শীতলপাটি দিয়ে তারা দেয়াল ও চালের ভেতর দিকটা সাজিয়ে তোলে । প্রায় প্রতিটি বাড়িতে থাকে ঢেঁকিঘর ও রান্নাঘর । গ্রামে টিন, কাঠ দিয়েও বাড়ি-ঘর তৈরি করা হয় । অবশ্য গ্রামে এখন ইট পাথরের তৈরি দালানও চোখে পড়ে ।

উপসংহার : শহরের ইট, পাথরে গড়া দালান-কোঠা দেখতে যেমন আকর্ষনীয়; তেমনি গ্রামের সাধারন মানুষের অল্প খরচে তৈরি ঘর-বাড়িও দেখার মতো ।




৩.প্রশ্ন : ‘নদীর সঙ্গে এদেশের মানুষের গভীর মিতালী’ - এ কথাটির অর্থ কী ?

উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, এ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে বহু নদ-নদী । নদীই এ দেশের প্রাণ এবং এর বুকে লুকিয়ে আছে এ দেশের লাখো মানুষের জীবিকার উত্স । এ নদীর মাছ বাঙালির সুস্বাদ ও সহজলভ্য আমিষ জাতীয় খাদ্য । এর জলে তৃষ্ণা মিটায় গ্রামপ্রধান বাংলাদেশের কোটি কোটি দরিদ্র বাঙালি । নদীর বুকে চলে নানা রকম নৌকা, লঞ্চ প্রভৃতি । নদীপথে পণ্যসামগ্রী সুলভে এবং সহজে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বহন করা হয় । বর্ষায় এ সকল নদ-নদীর স্রোতে বয়ে আসা পলি এ দেশের ভূমিকে করে উর্বর, কৃষকের মুখে ফুটিয়ে তোলে হাসি । নদীর তীরে তীরে গড়ে উঠেছে অনেক জনপদ । এসব জনপদে মানুষ ঘর বেঁধেছে, গড়ে তুলেছে গ্রাম-গঞ্জ ও হাট-বাজার । সর্বোপরি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানেষের জীবনে নদী কখনও প্রত্যক্ষ আবার কখনও পরোক্ষভাবে বিশাল আবদান রাখছে । তাই ‘নদীর সঙ্গে এ দেশের মানুষের গভীর মিতালি’-এ কথাটি যথার্থ ও অর্থবহ ।

উপসংহার : নদী বাংলাদেশের মানুষের জীবনে বিশাল আবদান রাখছে । নদী নিয়ে রচিত হচ্ছে সাহিত্য, কবিতা ও গান । নদীর বহুবিধ ব্যবহার নদী আর মানুষকে এক বৃন্তে আবদ্ধ করেছে ।

৪. প্রশ্ন : নদী, খাল-বিল ও সমুদ্রে পাওয়া যায় এমন দশটি মাছের নাম লিখ ।

উত্তর : ভুমিকা : ‘আমাদের এই দেশ’ রচনাটিতে ছোট-বড় নানা জাতের অসংখ্য মাছের কথা বলা হয়েছে । ভাতের সাথে মাছ এ দেশের মানুষের প্রিয় খাদ্য ।

নদী, খাল-বিল ও সমুদ্রে পাওয়া যায় এমন দশটি মাছের নাম হল:

(১) রুই, (২) কাতলা, (৩) বোয়াল, (৪) শোল, (৫) কৈ, (৬) শিং, (৭) ইলিশ, (৮) রূপচাঁদা, (৯) কোরাল ও (১০) ছুরি ।

শেষ কথা : এ দেশের নদ-নদী, খাল-বিল ও সমুদ্রে রয়েছে মাছের প্রাচুর্য । বাংলাদেশের ইলিশ মাছ-এর স্বাদ পৃথিবী বিখ্যাত । তাই আমাদের উচিত এ মত্স্য সম্পদকে বাঁচিয়ে রাখা ।

৫. প্রশ্ন : আমাদের মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয় কেন ?

উত্তর : ভূমিকা : প্রকৃতির রূপসী কন্যা বাংলাদেশ । এ দেশের উর্বর ভূমিরূপ ও জলজ সম্পদের প্রাচুর্যের ঐতিহ্য অনেক পুরনো । তাই আমাদের দেশের পরিচয় রচিত হয় অন্যভাবে ।

কারণ : সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা আমাদের এ বাংলাদেশ । নদী বিধৌত এ দেশের উর্বর ভূমিতে প্রচুর ফসল ফলে । বিশেষ করে ধান যেমন : পাইজাম, নাজিরশালাই, কাটারিভোগ, বালাম, বিন্নি ইত্যাদি। তাই আমাদের পরিচয় ভেতো বাঙালি হিসেবে । অন্যদিকে নদীর দেশ বাংলাদেশ । এ দেশের সাগার, নদীতে রয়েছে প্রচুর মাছ । যেমন: রূপচাঁদা, কোরাল, লাক্ষ্যা, লইট্যা, ছুরি, ফাইস্যা, রুই, কাতলা, মৃগেল, ভেটকি, চিতল, বোয়াল, শোল, কৈ, শিং, মাগুরসহ আরো নানা জাতের মাছ । এ সহজলভ্য মাছ আর ভাত আমাদের প্রিয় খাবার, স্বল্প শ্রম ও ব্যয়ে অতি সহজে এগুলো পাওয়া যায় বলে জীবন ও জীবিকার জন্য এর ওপর নির্ভরশীলতা আমাদের অনেক বেশি । আর তাই আমাদের মাছে-ভাতে বাঙালি বলা হয় ।

উপসংহার : ভাত ও মাছ বাঙালির প্রিয় খাবার । ভাতের সঙ্গে মাছ হলে বাঙালি খাবারে পরিতৃপ্তি পায় ।


1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 Live MeccaLive Blogger Tricks